ঘোড়া
আমরা যাইনি ম’রে আজো— তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয়:
মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জ্যোৎস্নার প্রান্তরে,
প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন— এখনও ঘাসের লোভে চরে
পৃথিবীর কিমাকার ডাইনামোর ’পরে।
আস্তাবলের ঘ্রাণ ভেসে আসে এক ভিড় রাত্রির হাওয়ায়;
বিষণ্ণ খড়ের শব্দ ঝ’রে পড়ে ইস্পাতের কলে;
চায়ের পেয়ালা কটা বেড়ালছানার মতে— ঘুমে—ঘেয়ো
কুকুরের অস্পষ্ট কবলে
হিম হ’য়ে ন'ড়ে গেল ও-পাশের পাইস্-রেস্তরাঁতে;
প্যারাফিন-লণ্ঠন নিভে গেল গোল আস্তাবলে
সময়ের প্রশান্তির ফুঁয়ে;
এই সব ঘোড়াদের নিওলিথ-স্তব্ধতার জ্যোৎস্নাকে ছুঁয়ে।
কমলালেবু
একবার যখন দেহ থেকে বার হ’য়ে যাব
আবার কি ফিরে আসব না আমি পৃথিবীতে?
আবার যেন ফিরে আসি
কোনাে এক শীতের রাতে
একটা হিম কমলালেবুর করুণ মাংস নিয়ে
কোনাে এক পরিচিত মুমুর্ষুর বিছানার কিনারে।
জীবনানন্দ দাশ
জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪) বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি। তাকে "রূপসী বাংলার কবি" বলা হয়। তার কবিতায় প্রকৃতি, নৈঃশব্দ্য ও মানবিক অনুভূতির গভীরতা প্রকাশ পেয়েছে। তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ”রূপসী বাংলা”, “ধূসর পাণ্ডুলিপি”, এবং “বনলতা সেন”। জীবনানন্দ দাশ বাংলা কবিতায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন, যা তাকে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমর করে রেখেছে।
আরো পড়ুন